বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীকে তারকা সংখ্যা কতটি
বিশ্বের যে কোনো জাতির পরিচয় প্রদানে সেই জাতির জাতীয় প্রতীকগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সাংস্কৃতিক জীবনধারা, মূল্যবোধ, আদর্শ ইত্যাদির প্রতিনিধিত্ব করে সেই দেশের জাতীয় প্রতীক। জাতীয় প্রতীক একটি দেশের পরিচয়কে বহন করে। পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশেরই জাতীয় প্রতীক আছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে সৃষ্টি হওয়া বাংলাদেশেরও জাতীয় প্রতীক আছে।
আজকের আলোচনায় বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীকের বর্ণনা, বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীকে কয়টি তারকা আছে? বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীক ডিজাইনার, বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীকে যে ৪টি তারকা রয়েছে তা দিয়ে কী বোঝানো হয়েছে ইত্যাদি সকল বিষয় আলোচনা করা হবে।
{tocify} Stitle={Custom Title}
বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীক
উভয় পার্শ্বে ধানের শীষ বেষ্টিত পানিতে ভাসমান জাতীয় ফুল শাপলা, তার শীর্ষেদেশে পাটগাছের তিনটি পরস্পরযুক্ত পাতা, তার উভয় পার্শ্বে দুটি করে তারকা সম্বলিত বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীক মন্ত্রিপরিষদ সভায় অনুমোদন লাভ করে ২৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৭২ সালে। এই জাতীয় প্রতীক ব্যবহারের অধিকারী শুধুমাত্র দেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী।
বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীকে কয়টি তারকা আছে?
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। স্বাধীনতার পরেই বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীক গ্রহণ করা হয়। গৃহীত বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীকে তারকা সংখ্যা ৪ টি। বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীকের চারটি তারকা দিয়ে বোঝানো হয়েছে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের চার মূলনীতি জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা।
বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীক কি?
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান এর ৪(৩) অনুচ্ছেদ অনুয়ায়ী বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীক এর বর্ণনা:
“প্রজাতন্ত্রের জাতীয় প্রতীক হইতেছে উভয় পার্শ্বে ধান্যশীর্ষবেষ্টিত, পানিতে ভাসমান জাতীয় পুষ্প শাপলা, তাহার শীর্ষদেশে পাটগাছের তিনটি পরস্পর-সংযুক্ত পত্র, তাহার উভয় পার্শ্বে দুইটি করিয়া তারকা৷”
বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীকে যে ৪টি তারকা রয়েছে তা দিয়ে কী বোঝানো হয়েছে?
বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীকের কেন্দ্রে স্থান পেয়েছে বাংলাদেশেরই জাতীয় ফুল শাপলা। বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীকে জলজ প্রস্ফুটিত এই শাপলা হলো আমাদের জাতীয়বোধ, অঙ্গীকার, সৌন্দর্য ও সুরুচির প্রতীক। শাপলা ফুলটিকে ঘিরে আছে ধানের দুটি শীষ। শাপলা ফুলের ঠিক উপরে পাটগাছের তিনটি পাতা; পাতা তিনটি পরস্পর যুক্ত অবস্থায় এবং পাট পাতার উভয় পার্শ্বে রয়েছে দুটি করে মোট চারটি তারকা। বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীকের মাঝে এই পানি, ধান ও পাট বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও অর্থনীতি প্রতীক রূপে বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত হয়ে আছে।একইসাথে তারকাগুলো দ্বারা ব্যক্ত করা হয়েছে বাঙালি জাতির লক্ষ্য ও উচ্চাকাঙ্ক্ষা।
বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীকের ডিজাইনার কে?
প্রখ্যাত বাংলাদেশী চিত্রশিল্পী পটুয়া কামরুল হাসান বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীকের ডিজাইনার।
বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীকের রূপকার কে?
বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীক তৈরী করতে সরকার শিল্পী কামরুল হাসানের উপর দ্বায়িত্ব দেয়। তখন বাংলা একাডেমির আজীবন সদস্য বাংলাদেশী শিল্পী ও নকশাবিদ মোহাম্মদ ইদ্রিস ও তাঁর সাথে শিল্পী শামসুল আলম এই কাজ দেখাশোনার দ্বায়িত্ব পান। পটুয়া কামরুল হাসানের নকশার উপর মোহাম্মদ ইদ্রিসের আঁকা ভাসমান শাপলা ও শামসুল আলমের দুই পাশে ধানের শীষবেষ্টিত পাটপাতা ও চারটি তারকা অংশটি মিলিয়ে বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীকের চূড়ান্ত রূপ দেওয়া হয়।
আজকের আলোচনায় আমরা বাংলোদেশের জাতীয় প্রতীক ও এই প্রতীক কি অর্থ বহন করে, বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীকে তারকা সংখ্যা কতটি বা বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীকে কয়টি তারা আছে ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করলাম। আলোচনার বাইরে যদি আরো কিছু জানার থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করবেন। ভালো লাগলে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ।