বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনকে শিশু দিবস হিসেবে পালনের প্রস্তাব করেন কে
১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন
শিশু দিবস শিশুদের নিয়ে পালিত একটি দিবস। প্রতি বছর সারাবিশ্বে একইসাথে ২০ নভেম্বর বিশ্ব শিশু দিবস হিসাবে পালন করা হলেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্ন তারিখেও শিশু দিবস পালিত হয়ে থাকে। বাংলাদেশে ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন জাতীয় শিশু দিবস হিসাবে পালন করা হয়। ১৭ই মার্চ প্রথম জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালন করা হয় ১৯৯৪ সালে। এই সময়ে বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা নামক একটি সংগঠন প্রথমবারের মতো বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালন করে।
{tocify} Stitle={Custom Title}
বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনকে শিশু দিবস হিসেবে পালনের প্রস্তাব করেন কে
সর্ব প্রথম ১৯২০ সালের ২৩ এপ্রিল তুরস্কের নাগরিকেরা শিশু দিবস পালন করেন। পরে রাষ্ট্রপুঞ্জ ২০ নভেম্বরকে বিশ্ব শিশু দিবস ঘোষণা করলে সারা বিশ্বে শিশুদের মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে আনা ও সচেতনা সৃষ্টির জন্য ২০ নভেম্বর বিশ্ব শিশু দিবস ও ১ জুন আন্তর্জাতিক শিশু দিবস পালন করা হয়। একই সাথে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নিজ নিজ ঘোষণা অনুযায়ী শিশু দিবস থাকলেও বাংলাদেশে ছিলোনা। ১৯৯৩ সালের ২৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে একটি বেসরকারি শিশু সংগঠন বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার এর জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সম্মেলনে প্র্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা। এই সম্মেলনে আমি বীরাঙ্গনা বলছি খ্যাত বাংলা একাডেমি পুরস্কার প্রাপ্ত লেখিকা বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক ও সমাজকর্মী ড. নীলিমা ইব্রাহিম বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালনের প্রস্তাব করেন। তারপর ১৯৯৪ সালে প্রথমবারের মত বেসরকারিভাবে শিশু কিশোর মেলা সংগঠনের আয়োজনে শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ১৭ই মার্চ জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনকে শিশু দিবস পালনের ঘোষণা দেন কে
১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা প্রথমবার সরকার গঠন করলে ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনকে শিশু দিবস পালনের পালনের ঘোষণা দেন। জাতির পিতার জন্মদিনকে শিশুদের জন্য উৎসর্গ করে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। বাংলাদেশকে শিশুদের জন্য নিরাপদ আবাসভূমিতে পরিণত করার শপথ নিতেই ১৭ ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে বাংলাদেশে জাতীয় শিশু দিবস পালিত হয়।
১৭ মার্চ জাতীয় শিশু দিবস কেন
বঙ্গবন্ধুর শিশুপ্রীতির কথা তখন সবার জানা। শিশুদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর মমতা ছিলো অতুলনীয়। তিনি শিশুদের খুবই ভালোবাসতেন। স্বাধীন বাংলাদেশে যখন তিনি সবার বঙ্গবন্ধু হয়ে উঠেছেন, সবার কাছে যখন তিনি মুজিব ভাই নামে পরিচিত; তখনও তিনি শিশুদের সঙ্গে সময় কাটাতে পছন্দ করতেন। তাঁর জন্মদিনে তিনি শিশুদের সঙ্গে কাটাতেন। শিশুরা দলবেঁধে তাঁকে শুভেচ্ছা জানাতে গণভবনে তাঁর কাছে গেলে, তিনি শিশুর মতো তাদের সঙ্গে মিশে যেতেন। তিনি কচিকাঁচার মেলা, খেলাঘরসহ অন্যান্য শিশু সংগঠনগুলোর অনুষ্ঠানে নিয়মিত যেতেন। এমনকি শেখ হাসিনাকে যখন কিশোরী মেয়ে তখন তিনি তাকে কচিকাঁচার আসরে ভর্তিও করিয়ে দিয়েছিলেন। একবার শিশুদের এক সমাবেশে গিয়ে তিনি বলেছিলেন- এই পবিত্র শিশুদের সঙ্গে তিনি মেশেন মনটাকে একটু হালকা করার জন্য। তার এই ছোট্ট একটি বক্তব্য শিশুদের প্রতি তার আবেগকে ফুটিয়ে তুলেছিল। এসব সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে তার জন্মদিনটায় জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে শিশুরা যেন অনুপ্রাণিত হয় সেজন্য ১৭ মার্চ জাতীয় শিশু দিবস পালন করা হয়। শিশুদের নির্যাতন, নিপীড়ন ও অধিকার নিশ্চিত করতে ১৯৭২ সালে শিশু আইন তৈরি করেন বঙ্গবন্ধু। তিনি বিশ্বাস করতেন বর্তমানের শিশুরাই বাংলাদেশেকে ভবিষ্যতের সোনার বাংলা গড়তে পারবে।
আরো পড়ুন:- বাংলাদেশের শিশু দিবস
বাংলাদেশে বিশ্ব শিশু দিবস বা আন্তর্জাতিক শিশু দিবস উদযাপন করা হলেও জাতীয় শিশু দিবস ছিল না। ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা প্রধনমন্ত্রীত্ব পেলে ওই সময়ের মন্ত্রিসভা রাষ্ট্রীয় ‘খ’ শ্রেণিভুক্ত দিবস হিসেবে ১৭ মার্চকে জাতীয় শিশু দিবস ঘোষণা করে। এবং সরকারিভাবে ১৯৯৭ সাল থেকেই বাংলাদেশে জাতীয় শিশু দিবস উদযাপিত হতে থাকে। কিন্তু ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পরাজয়ের পর বিএনপি সরকার শিশু দিবস পালন বাতিল করে। ফলে ২০০২ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত দিবসটি পালিত হয়নি।
আরো পড়ুন:-বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস
তাহলে আজকের আলোচনায় ১৭ মার্চ জাতীয় শিশু দিবস কেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন, বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনকে শিশু দিবস হিসেবে পালনের প্রস্তাব করেন কে, বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনকে শিশু দিবস পালনের ঘোষণা দেন কে ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। শেয়ার ও কমেন্ট করে পাশে থাকুন।